ভন্ড-প্রতারক-যাদুকর, ওঝা, তাবিজ ব্যবসায়ী কিংবা কবিরাজের পরিচয় জেনে তাদের থেকে বেঁচে থাকার সুবিধার্থে এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন এবং সাবধানতা অবলম্বন করুন।
যাদের ধারের কাছেও যাওয়া উচিৎ নয় এবং এদের থেকে বেঁচে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজঃ
কিছু অসাধু, ভন্ড, প্রতারক, ওঝা, যাদুকর, কবিরাজ এবং আলেম নামধারী (হুজুর বেশী) স্বার্থৈনেশী লোকেরা রয়েছে, যারা মানুষের সরলতা ও বিপদে অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে অর্থ কামানোর ধান্দা বের করেছে, শুনেছি অনেক ভন্ড-ওঝা, তদবিরকারীরা অনেক বিপদ্গ্রস্থকে তাদের অসাবধানতার সুযোগে ব্লাকমেইল করে টাকা-পয়সা এমনকি মেয়েদের সম্মানহানীর মতো জঘন্য ঘৃণিত কাজও হাসিল করে নিচ্ছে, এরপরও অনেকের হুশ ফিরে না, কিছু পাবলিক আছে তারা চটকদার ভন্ড-প্রতারকদের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিপদমুক্ত হতে গিয়ে আরো বেশি বিপদ্গ্রস্থ হচ্ছে…
নিচের কার্য-কলাপ গুলো কারো থেকে প্রকাশ পেলে, তার থেকে নিজেকে দূরে রাখাটাই ভালো, কারন এদের থেকে ভালোর চাইতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, মনে রাখবেন এই লক্ষনগুলোর বেশিরভাগ লক্ষনই… ভন্ড-প্রতারক-যাদুকর, তাবিজ ব্যবসায়ী কিংবা কবিরাজের মধ্যেই পাওয়া যায়, এরপর কি করবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনার।
চটকদার ভন্ড-প্রতারকদের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন এবং কথোপকথন থাকে এই রকম-
১. আপনাকে ইনবক্সে আসতে বলবে, পাবলিক ফিল্ডে কথা বলতে এরা ভয় পায়, কারন পাবলিক পোস্টে এদের সাজেশন বা চাহিদা প্রকাশ পাইলে, এদের শয়তানি ধরা পড়ে যাবে তো।
২. আপনাকে নির্দিষ্ট করে সময় বলে দিবে, আপনার ২ মাসের মধ্যেই বাচ্চা গর্ভে আসবে, ৩ মাসের মধ্যেই বিয়ে হবে এই রকম, (এরকম বলার ক্ষমতা কোনো মানুষেরই নেই, এটা শির্ক-কুফরি মূলক কথা, এটা যারা বলবে, ও যারা তাদের কথা শুনে বিশ্বাস করে তাদের কাছে চিকিৎসার জন্য যাবে এরা সকলেই কুফরির অন্তর্ভুক্ত হবে।
৩. নির্দিষ্ট করে আপনাকে যে কোনো একটা সমস্যার কথা বলে দিবে যে, আপনার এই হয়েছে ওই হয়েছে, (আন্দাজে ঢিল ছুড়বে,, {অসুস্থ একজন মানুষকে, যে যাই বলে তখন সেটাকেই সত্য বলে মনে হয়} আপনার মনে হবে হায় হায়, উনি কিভাবে এটা বলে দিলো, নিশ্চই উনি খুবই কামেলদার লোক), কিন্ত কাউকে দেখে বা কারো কথা শুনেই এরকম বলা কোনো ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়, তবে হ্যাঁ বিজ্ঞ লোকেরা একটা ধারনা করতে পারে মাত্র।
৪. আপনার মায়ের নাম, আপনার নিজের নাম চাইতে পারে, এগুলোর সাহায্যে ওরা কুফরি করে থাকে, চিকিৎসা করবে আপনার রোগের, এখানে নামের কি প্রয়োজন তা আমার বুঝে আসেনা।
৫. আপনার পিকচার চাইতে পারে, যেগুলো দিয়ে পরবর্তীতে আপনাকেই ব্লাকমেইল করতে পারে।
৬. আপনার ফুল এড্রেস চাইতে পারে, এটাও আপনাকে ব্লাকমেইল করার একটা পন্থা হতে পারে।
৭. আপনার যে কোনো সমস্যার হান্ড্রেড পারসেন্ট সমাধান করে দিতে পারবে এমন কথা বলে, (এরকম বলার ক্ষমতা কোনো মানুষেরই নেই, এটা শির্ক-কুফরি মূলক কথা, এটা যারা বলবে, ও যারা তাদের কথা শুনে বিশ্বাস করে তাদের কাছে চিকিৎসার জন্য যাবে এরা সকলেই কুফরির অন্তর্ভুক্ত হবে।
৮. এতো সুন্দর আর মিষ্টি ব্যবহার করবে, যাতে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন তার উপর।
উপরে উল্লেখিত কারনগুলা দেখতে পেলেই বুঝবেন আপনি কোনো ভন্ড-প্রতারক-যাদুকর কিংবা কবিরাজের খপ্পরে পড়েছেন…. ওদের খপ্পরে পড়লে এবং ওদেরকে আপনার তথ্য বা পিকচার দিলে, যদি ওরা আপনাকে যা বলবে, যত টাকা চাইবে তা আপনি দিতে না চান,,, তখন আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, আপনাকে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করবে। ওদের খপ্পরে পড়লে অর্থের সাথে সাথে ঈমানও বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।
এমতাবস্থায় আপনার কাজ হলো তাদেরকে (এমনকি অনলাইনে যে কাউকেই) নিজের তথ্য না দেওয়া, পিকচার দেওয়ার তো কোনো প্রশ্নই ওঠেনা, আর তাদের থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলা, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দেওয়া জনসম্মুখে,, যাতে করে অন্যরাও এদের খপ্পর থেকে বেঁচে থাকতে পারে।
ইসলামি শরিয়তে চিকিৎসা পদ্ধতিতে কারোরই বলার ক্ষমতা নেই, আপনি এই চিকিৎসা করে সুস্থ হবেন কি হবেন না, আপনার বাচ্চা হবে কি হবে না, আপনার বিয়ে হবে কি হবে না,,, সুস্থ করার মালিক, বাচ্চা দেনেওয়ালা, বিয়ে যার হুকুমে হয়, তিনি একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, তিনি চাইলে হবে আর না চাইলে হবেনা এই কথার উপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখেই কুরআন সুন্নাহ মুতাবেক চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
আল্লাহ তায়া’লা আমাদের সকলকে হেফাজত করুন, আমাদেরকে ভালো মন্দ বুঝার তাওফিক দান করুন, আমীন।
সংকলনেঃ কামরুল ইসলাম (রায়হান)
ফেসবুক গ্রুপঃ রুকইয়াহ সেবা প্রকল্প গ্রুপ
ফেসবুক পেইজঃ রুকইয়াহ সেবা প্রকল্প পেইজ
ইউটিউব চ্যানেলঃ রুকইয়াহ সেবা