অনেকেই প্রশ্ন করেন হিজামা কি ?
রুকইয়ার সাথে হিজামার সম্পর্ক কি ?
শরিয়াহ সম্মত (কুরআন-সুন্নাহ মুতাবেক) চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী পদ্ধতি সমূহের মধ্যে রুকইয়াহ ও হিজামা অন্যতম, কারন ইসলামী শরিয়তে চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে সবচেয়ে উত্তম চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে “রুকইয়াহ ও হিজামা”, স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে আজামাঈন (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) ও যুগে যুগে সালাফে-সালেহীনগণ খুবই গুরুত্বের সাথে এ পদ্ধতি গ্রহন করেছেন।
আমাদের গ্রুপের মূল চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে (আমরা যে চিকিৎসার সাজেশন দিয়ে থাকি) রুকইয়াহ শারঈয়্যাহ বা শরিয়াহ সম্মত (কুরআন-সুন্নাহ মুতাবেক) চিকিৎসা পদ্ধতি, যদিও হিজামা সংক্রান্ত কোনো সেন্টার বা সার্ভিস আমাদের কাছে নাই, কিন্তু হিজামার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা আমাদের অনেক পেশেন্টকে হিজামার পরামর্শ দিয়ে থাকি।
রুকইয়াহ ও হিজামা বলতে কি বুঝি?
(ক) #রুকইয়াহ_মূলতঃ জ্বিন, যাদু, বদনজর, ওয়াসওয়াসা এসব (প্যারা-নরমাল) সমস্যার জন্য ইসলাম সম্মত উপায়ে কুরাআন এর আয়াত ও হাদিসের দুয়া পড়ে ঝাড়ফুক করার নাম।
(খ) #হিজামা_মুলতঃ মানুষের সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতার জন্য প্রাচীন ও সুন্নাহ সম্মত এক চিকিৎসা ব্যবস্থার নাম।
রুকইয়ার সাথে হিজামার সম্পর্কেঃ
নজর / জ্বিন / যাদু / সিহর / ওয়াসওয়াসা বা অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য রুকইয়ার সাথে সাথে হিজামাও খুবই গুরত্বপূর্ণ কার্যকরী ভুমিকা রাখে, তাই রুকইয়ার সাথে হিজামার সম্পর্ক অনেকটা ভাই-বোনের মতো পরিপূরকভাবে জড়িত।
আমাদের গ্রুপ এবং পেইজ থেকে রুকইয়াহ সম্পর্কে অনেক লেখালেখি হয়েছে, অনেক অডিও-ভিডিও পেয়েছেন, যার প্রেক্ষিতে আপনারাও রুকইয়াহ সম্পর্কে এখন অনেকেই অবগত হয়েছেন।
যেহেতু হিজামা সম্পর্কে আপনারা এখনো অজ্ঞ, সেহেতু এখানে শুধু হিজামা নিয়েই আলোচনা করছি, যাতে আপনারা রুকইয়ার পাশাপাশি হিজামা সম্পর্কেও জানতে পারেন এবং এর থেকে উপকার হাসিল করতে পারেন।
হিজামা কী?
হিজামা অন্যতম একটি সুন্নাহ সম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি, যা বিজ্ঞান সম্মত একটি গ্রহণযোগ্য চিকিৎসা পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার মধ্যে মানুষের সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা বিদ্যামান রয়েছে, এই পদ্ধতি ইউনানী ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসারও অন্তর্ভুক্ত, যাকে বাংলায় শিঙ্গা এবং ইংরেজিতে Cupping Therapy ও বলা হয়, ইউনানীতে হাজামাৎ আর আয়ুর্বেদিকে রক্তমোক্ষণ নামে বেশ পরিচিত।
হিজামার পদ্ধতিঃ
এই চিকিৎসা ব্যবস্থা বহু প্রাচীণ, আগে বাঁশ কিংবা প্রাণীর শিং ব্যবহার করে এই চিকিৎসা করা হতো, কিন্তু বর্তমানে শরীরের নির্দিষ্ট কিছু অংশ থেকে সাধারণত গ্লাস কিংবা প্লাস্টিক কাপের সাহায্যে রক্ত বের করে ফেলে দেয়া হয়, এর দ্বারা ভেতরের দূষিত রক্ত দূর হয়ে যায়, যার ফলে মানুষ প্রশান্তি অনুভব করে।
কেনো হিজামা করাবেন?
সুস্থ লোকেরাও হিজামা করাতে পারেন, এতে সুস্থতার সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে, আপনার রোগ হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যান, তারপর প্রয়োজন পড়লে অস্ত্রপোচারও করান, তেমনিভাবে নজর / জ্বিন / যাদু / সিহর / ওয়াসওয়াসা বা অন্যান্য শারিরীক- মানসিক- আধ্যাত্মিক রোগের জন্য হিজামা করাবেন, তাহলে রোগ থেকে মুক্তিও পাবেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি সুন্নাতের উপরও আমল করা হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রচলিত চিকিৎসা বিজ্ঞান কি হিজামাকে সমর্থন করে?
প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থা হিজামা পদ্ধতিকে বাতিল, অকার্যকর বা ক্ষতিকর বলে না, বরং এটাকে সমর্থন করে, প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার সহযোগী হিসেবে এই চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে এই যে, হিজামার ব্যপারে রাসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজামাকে বলেছেন সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসা ব্যবস্থা।
হিজামা সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হাদীস দেখে নিতে পারেন, (এছাড়াও আরও হাদিস রয়েছে)।
ক) হযরত জাবির রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় হিজামায় শেফা রয়েছে।” (সহীহ মুসলিম, হাদীছ নম্বর: ২২০৫)
খ) হযরত আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হিজামাকারী কতইনা উত্তম লোক, সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।”
(সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নম্বর: ২০৫৩)
গ) হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জিবরীল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।” (আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর: ৭৪৭০)
ঘ) হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোধ ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।” (সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৭)
ঙ) হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, কেউ হিজামা করতে চাইলে সে যেন আরবী মাসের ১৭, ১৯ কিংবা ২১ তম দিনকে নির্বাচিত করে, রক্তচাপের কারণে যেন তোমাদের কারো মৃত্যু না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে।” (সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৬)
চ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সূত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্নিত, “তিনি বলেন রোগমুক্তি তিন জিনিসের মধ্যে রয়েছে, হিজামা লাগানো, মধু পাণ করা এবং আগুন দিয়ে দাগ দেয়ার মধ্যে, তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে দাগ দিতে নিষেধ করি”
ছ) কালো যাদু বা কুফুরী বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যেঃ
ইবনুল কাইয়্যূম (রহঃ) মন্তব্য করেন, রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন যাদু দ্বারা পীড়িত হন, তখন তিনি মাথায় সিঙ্গা লাগান এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম ঔষধ যদি সঠিকভাবে করা হয়। (যাদ আল মাআদঃ ৪/১২৫-১২৬)
হিজামা কিভাবে কাজ করে?
বদ-রক্ত, রোগের জন্য দায়ী জীবাণু প্লাজমা বা ফ্লুইডের সাথে বের করে নিয়ে আসা হয়, যা শরীর থেকে রোগের জন্য দায়ী জীবাণু সরিয়ে ফেলে, এর মাধ্যমে বর্তমানে সংক্রামক সকল রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছে, এছাড়া অসংক্রামক অনেক রোগও ভালো হয় নিয়মিত হিজামা করালে, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ও রক্ত পরিষ্কার রাখে,, শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত জৈব-রাসায়নিক বর্জ্য নিষ্কাশন করে।
হিজামা একটি চিকিৎসা যাতে অন্যান্য মেডিক্যাল ড্রাগসের মত কোন সাইড ইফেক্ট নেই, কেবল নিরাময় আছে (সুবহানাল্লাহ), রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর নিজের জন্য এ চিকিৎসাটি করিয়েছিলেন।
হিজামাতে যে সকল সমস্যায় উপকার হয়ঃ
(১) রক্তদূষণ, উচ্চরক্তচাপ,
(২) ঘুমের ব্যাঘাত, স্মৃতিভ্রষ্টতা, মানসিক সমস্যা,
(৩) মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘমেয়াদী মাথা ব্যাথা, অস্থি সন্ধির ব্যাথা, পিঠে ব্যাথা, হাঁটু ব্যাথা, দীর্ঘমেয়াদী সাধারণ মাথা ব্যাথা, ঘাড়ে ব্যাথা, কোমর ব্যাথা, পায়ে ব্যাথা, মাংসপেশীর ব্যাথা, দীর্ঘমেয়াদী পেট ব্যথা, হাড়ের স্থানচ্যুতি জনিত ব্যাথা।
(৪) সাইনুসাইটিস
(৫) ব্রণ
(৬) কোলেস্টেরল
(৭) হাঁপানি
(৮) গ্যাস্ট্রিক পেইন, গ্যাস্ট্রিক আলসার
(৯) বিষক্রিয়া
(১০) দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগ
(১১) ত্বকের নিম্নস্থিত বর্জ্য নিষ্কাশন
(১২) ফোঁড়া-পাঁচড়া
(১৩) চুল পড়া
(১৪) স্পোর্টস ইঞ্জুরি
(১৫) হরমোনাল সমস্যা
(১৬) ইরেক্টিল ডিসফাংশন [ই.ডি],
(১৭) মাদকাসক্ত এবং আরও অনেক সমস্যার জন্য হিজামা কার্যকরী ইনশাআল্লাহ।
শিঙা লাগানো নিয়ে সতর্কতাঃ
আমাদের দেশে পূর্ব থেকে এই শিঙা লাগানোর একটা প্রথা প্রচলিত আছে, যা কিনা বেদে সম্প্রদায়ের মানুষজন করে থাকে, বিশেষ করে বেদে মহিলারা, এরা শিঙা লাগানোর কথা বলে বাড়ি বাড়ি মহল্লায় ডাকাডাকি করে বেড়ায়, শিঙা লাগানোর পাশাপাশি কৌশলে পরিবারের সার্বিক অবস্থা জেনে নানারকম কথার চাতুরতায় আপনার সাথে ধোকাবাজি করে:- নগদ অর্থ, স্বর্ণ অলংকার এবং ঘরের চাল, ডাল,তেল, ফ্রিজে থাকা সংরক্ষিত মাছ গোস্ত এমনকি কাপড় চোপড়ও হাতিয়ে নিতে বেশ পটু, এরা শিঙা লাগানোর সময়ে ও আগে-পরে কিছু বাক্য উচ্চারণ/মন্ত্র পড়ে থাকে, অর্থাৎ যাদুর মন্ত্র পড়ে শয়তানের সাহায্য নিয়ে সে রোগিকে সাময়িকভাবে উপকার করে, সুতরাং এদের কাছে না যাওয়া, তাদের কাছ থেকে শিঙা না লাগানো জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা, যাতে করে ঈমান ও আমল বিনষ্ট না হয়।
হিজামার খরচ সম্পর্কিত ধারণাঃ
এবার আসি হিজামা করাতে কোথায় কেমন খরচ হয় এবং এই খরচগুলি হওয়ার কারণ কি?
হিজামার খরচটা নির্ভর করে মূলত স্থান-কাল, পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং হিজামা করানেওয়ালার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে। যেমনঃ
ঢাকার বানিজ্যিক এলাকার হিজামা সেন্টারের খরচ আর আবাসিক এলাকার খচর যেমন এক রকম নয়, তেমনি শহরে ও মফস্বলে খরচ এক নয়, এছাড়াও হিজামা থিয়েটারের সার্বিক সেটাআপের (ডেকোরেশন-মাসিক ভাড়া) উপর নির্ভর করে আরও অন্যান্য খরচ।
হিজামাতে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের কাপ, গ্লাবস, মাস্ক, এপ্রোন, ব্লেড/নিডেল, বেড টিস্যু, রক্ত পরিস্কারে ব্যবহৃত টিস্যু, জীবাণু প্রতিরোধে ব্যবহৃত আনুষাঙ্গিক অন্যান্য সকল উপকরণ গুলো একবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প্রথমত প্রতি পয়েন্ট হিসেবে খরচ নির্ধারণ করা হয় যেমনঃ যার খরচা কম সেও প্রতি পয়েন্টে সর্বনিম্ন ১০০/- নিয়ে থাকে, এবং যাদের খরচ বেশি তারা সেই অনুযায়ী প্রতি পয়েন্টে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।
এখন ধরুন আপনার মাথা ব্যাথার সমস্যায় হিজামা করালে যদি কমপক্ষে দশটা পয়েন্ট হিজামা করানো লাগে, সেক্ষেত্রে ১০০০/১৫০০/২০০০ টাকা পর্যন্ত স্থান-কাল, পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে বিল হতে পারে।
আবার ধরুন আপনার কোমর ও পিঠ ব্যাথার জন্য হিজামা করাবেন সেখানে যদি ২০ টা পয়েন্টে হিজামা করাতে হয়, তখন সে অনুযায়ীই বিল হবে।
এছাড়া একজন দক্ষ হিজামার ডাক্তার/ থেরাপিস্ট/স্পেশালিস্ট এর হিজামা কনস্লাটেশন ফিও নিতে পারে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা অথবা কনস্লাটেশন ফি নাও নিতে পারে, সেটা তার উপর নির্ভর করে।
হিজামার খরচ এবং হিজামার বিনিময় নেওয়া জায়েজ কিনা? এ সম্পর্কে হাদিসঃ
আনাস বিন মালিক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর নিকট হিজামা বৃত্তির উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ শরীরে হিজামা লাগিয়েছেন, আবু তায়বা তাকে হিজামা করিয়েছেন, তাকে ২সা পরিমাণ (প্রায় ৫কেজি) খাদ্যবস্তু দেয়ার নির্দেশ দেন এবং তার মালিকের সাথে আলোচনা করেন, এতে তার উপর ধার্যকৃত কর কমিয়ে দেয় এবং তিনি আরো বলেন তোমরা যেসব পদ্ধতিতে চিকিৎসা করাও হিজামা হচ্ছে সেইসব এর চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা। [সহী মুসলিম, হা/৩৯৩০ (হাদীস একাডেমী) সহীহুল বুখারী, হা/২১০২ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স)]
আমর বিন মালিক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি আনাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) কে বলতে শুনেছি যে, “নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজামা লাগাতেন এবং কোন লোকের পারিশ্রমিক কম দিতেন না”। [সহীহুল বুখারী, হা/২২৮০ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) সহী মুসলিম, হা/১৫৭৭, মাসনাদে আহমাদ, হা/১২২০৭]
ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজামা করালেন এবং যে তাকে হিজামা করেছে তাকে তিনি মজুরী দিয়েছিলেন, যদি তিনি তা অপছন্দ করতেন তবে তাকে পারিশ্রমিক দিতেন না। [সহীহুল বুখারী, হা/২১০৩, ২২৭৯ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স)]
অতএব, হিজামা করিয়ে পারিশ্রমিক নেয়ার অবৈধতা সংক্রান্ত বিধান, পরবর্তিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আমল ও নির্দেশ দ্বারা বাতিল/মানসুখ হয়ে গেছে, এবং হিজামা করিয়ে এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক নেয়া যে বৈধ, এ বিষয়ে আর কোনো সংশয় থাকার কথা নয়।
আশা করি, এই লেখাটি হিজামা ও হিজামা করিয়ে পারিশ্রমিক নেয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্নকারীদের উত্তর হিসেবে যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
পরামর্শগুলো ফলো করতে পারেন, আর হিজামা করানোর জন্য নিজ দায়িত্বে জেনে বুঝে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তার/হাজ্বম (যিনি হিজামা করায়)/থেরাপিস্ট/স্পেশালিস্ট/এক্সপার্ট এর নিকট হিজামা গ্রহণ করতে পারেন, এতে দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যানকর হবে ইনশাআল্লাহ।
বিঃদ্রঃ আমাদের গ্রুপ থেকে কোনো সেন্টার বা ব্যাক্তিকে হিজামার জন্য প্রোমোট করা হয়না, সেহেতু নিজ দায়িত্বে জেনে বুঝে আপনারা হিজামা করাবেন, ঢাকাসহ সারা দেশেই বিভিন্ন স্থানে হিজামা সেন্টার আছে একটু খোঁজাখুঁজি করলে ঠিকানা পাবেন, আর আপনাদের সুবিধার্থে আমাদের জানা আছে এমন কয়েকটি হিজামা সেন্টারের ঠিকানার লিংক সংযোজন করলাম, …… তবে কোন সেন্টারে আপনি হিজামা করাবেন, এ ব্যাপারে আমরা কোনো দায়বদ্ধ নই।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বুঝার তাওফিক দিন, সবাইকে সুস্থ ও নিরাপত্তার জীবন দান করুন, (আমিন)।
_______________________
সংকলনেঃ Kamrul Islam Rayhan
কৃতজ্ঞতায়ঃ রুকইয়াহ সেবা প্রকল্প গ্রুপ