﷽
(ক) আমি কাদের অনুসরণ করি এবং কেনো করি ?
(খ) দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করতে করনীয়ঃ
(গ) বই পড়ার প্রতি মনোযোগ বাড়ানোঃ
(ঘ) বাঁধা দূর করে “রুকইয়াহ শারঈয়াহ” শুরু করা উচিৎ।
(ক) ইসলাম ধর্মের মূল বিষয়ই হচ্ছে জানা এবং মানা, জ্ঞ্যাত হওয়া এবং অনুসরণ করা, শুনলাম এবং মানলাম এই থিউরিই হচ্ছে একজন খাঁটি মুসলিমের মূলতন্ত্র।
যুগে যুগে নবী-রাসুল (আলাইহিস সালামগণ) এসেছিলেন মানুষকে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের জীবনে দ্বীন বাস্তবায়নের মাধ্যমে উম্মতকে অনুসরণ করার তাকীদ দিয়েছেন,
আর এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রিয় নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসেছিলেন শেষ জামানার উম্মত, উম্মতে মুহাম্মদী অর্থাৎ আমাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিতে এবং দ্বীন মানার পদ্ধতি/ত্বরীকা হাতে-কলমে দেখিয়ে দিতে।
আমাদের প্রিয় নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), সাহাবা (রাদ্বিয়াল্লাহু আলহুম) গণকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে এবং তা নিজের জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন।
ক্রমান্বয়ে সাহাবা (রাদ্বিয়াল্লাহু আলহুম) গণ, নবীজীর অনুসরণে তাবেঈ (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণকে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন।
ক্রমান্বয়ে তাবেঈ (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণ, সাহাবা (রাদ্বিয়াল্লাহু আলহুম) গণের অনুসরণে তাবে-তাবেঈ (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণকে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন।
ক্রমান্বয়ে তাবে-তাবেঈ (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণ, তাবেঈ (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণের অনুসরণে পরবর্তি আঁকাবারে দ্বীন (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণকে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন।
ক্রমান্বয়ে আঁকাবারে দ্বীন (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণ, তাবে-তাবেঈ (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণের অনুসরণে পরবর্তি উম্মতে মুহাম্মদীদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিয়েছেন এবং নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতে-কলমে দেখিয়েছেন।
এই একই ধারাবাহিকতায় উম্মতে মুহাম্মদীদের মধ্য থেকে আলেম-ওলামা ও দ্বীনের দাঈগণ, আঁকাবারে দ্বীন (রাহে্মাহুল্লাহু আনহুম) গণের অনুসরণে চলমান উম্মতে মুহাম্মদীদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিয়ে চলেছেন এবং নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিচ্ছেন।
তাহলে বুঝা গেলো দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করেই আমল শুরু করলাম, এর দ্বারা পুরোপুরো দ্বীন মানা সম্ভব নয়, দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার সাথে সাথে আলেম-ওলামাদের অনুসরণ করাও অতীব জরুরি, আর এটাই আনাদের দ্বীন পালনের ধারাবাহিক পদ্ধতি, যা চলমান আলেম-ওলামা ও দ্বীনের দাঈগণ এর দ্বীনি শিক্ষা ও বাস্তব আমলের ক্রমধারা একেবারে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর্যন্ত গিয়ে পৌছেছে।
সুতরাং কোনো হক্কানী আলেম-ওলামা ও দ্বীনের দাঈগণ এর অনুসরণ করা মানেই হলো আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অনুসরণ করা, আর এজন্যই আমাদের উচিৎ হক্কানী আলেম-ওলামা ও দ্বীনের দাঈগণ এর অনুসরণ করা।
অনেক অতি জ্ঞানপাপী,
আমি নির্দিষ্ট কাউকে অনুসরণ করি না। একেক বিষয়ে একেকজনকে অনুসরণ করি। যেমনঃ
- সাধারণ মাসয়ালা-মাসায়েল যথাসাধ্যে স্থানীয় মুফতি সাহেব থাকে জানার চেষ্টা করি। এছাড়া শাইখ জিয়াউর রহমান হুজুরের পরিচালিতে whatsapp গ্রুপে প্রশ্ন করি প্রয়োজনে। এছাড়াও মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল মালেক প্রমুখদের মতামতকে প্রাধান্য দেই। এছাড়াও প্রয়োজনে হানাফি ফিকহ গ্রুপ, iom এর সাইট থেকে সাহায্য নেই। (হানাফি ফিকহ গ্রুপ এবং আইওএমের সাইট থেকে ফতোয়া নেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করি)
- রুকইয়াহর ক্ষেত্রে আমার সরাসরি ওস্তাদ হলেন রুকইয়াহ বইয়ের লেখক আব্দুল্লাহ আলমাহমুদ। এছাড়া উম্মে আব্দুল্লাহর লেখনি ও চিন্তা-ভাবনা দ্বারা আমি প্রভাবিত। এর বাইরে সরাসরি কারও থেকে কিছু শিখিনি। ওস্তাদ টিম হাম্বলের পদ্ধতি অনুসরণ করি, এতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এছাড়া আবু ইব্রাহিম হাসনাঈনের লেকচার শুনেছি, হাফিজ আল মুনাদির রবের আশ্রয় পড়েছি, শাইখ ওয়াহিদ বিন আব্দুস সালাম বালীর বই পড়েছি। এছাড়া সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন রাকিদের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হয়েছি। সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সবাইকে যে ১০০ ভাগ অনুসরণ করি তা নয়। বরং কিছু কিছু বিষয়ে আমার নিজস্ব মত রয়েছে।
- আহলে হাদিসদের নিয়ে পড়াশুনার সময় লুৎফর রহমান ফরায়েজি, তাহমিদুল মাওলাসহ অন্যান্য লেকচার শুনেছি।
- ডাক্তার জাকির নায়েকের প্রচুর লেকচার শুনেছি একসময়।
- আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহিমাহুল্লার বই পড়েছি, লেকচার দেখেছি।
- বর্তমানে দেলোয়ার হোসাইন সাঈদির (রাহিমাহুল্লাহ) লেকচার দেখি ইউটিউব থেকে। (মজার ব্যাপারে হল এই লেকচার গুলা একাধিকবার শুনলেও বোরিং লাগে না। সুবহানাল্লাহ!)
- এছাড়াও শাইখ আহমাদুল্লাহ, ডাক্তার আমিরুজ্জামান মুহাম্মাদ শামসুল আরেফিন (ডাক্তার শক্তি) লেকচার শুনি অনেক সময়।
(খ) ইলম শেখাঃ ইলমের জন্য উচিত উস্তাজ/উস্তাজার সন্ধান করা। অফলাইনে শিখা। একান্ত সম্ভব না হলে অনলাইন। যেখানেই যান শুধু ফিকহ কোর্সে ভর্তি হবেন। তারা আরও কোর্স দিতে চাইবে। আপনি ফোকাস ঠিক রেখে ফিকহের কোর্স করবেন। প্রয়োজনীয় ইলম শিক্ষা করা ফরজ। কাজেই আগে দরকারী মাসায়ালা মাসায়েল শিখতে হবে। কোর্স করা সম্ভব না হলে আপনি মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন হুজুরের “আহকামে যিন্দেগী” কিনে নিন। আর মেয়েদের জন্য হল “আহকামুন নিসা”, একই লেখকের।
(গ) পড়াশুনায় অনাগ্রহ কাটানোঃ যারা রুকইয়াহ সংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্ত তাদের একটা অন্যতম সমস্যা এটা। পড়াশুনা করতে পারে না। বিশেষ করে দ্বীনি পড়াশুনা। তাদের জন্য পরামর্শ হল রুকইয়াহ শক্তভাবে করা। নিজেকে শক্ত রেখে রুকইয়াহ করতে হবে। পরাজিত হওয়া যাবে না। এক পৃষ্ঠা হোক বা দুই পৃষ্ঠা, নিয়মিত পড়তে হবে। পড়তে পড়তেই পড়ার অভ্যাস হবে। প্রতিদিন করতে হবে এভাবে, একদিনও গ্যাপ দেয়া যাবে না।
আর যদি ভিডিও কন্টেন্টের মাধ্যমে শিখতে চান তাহলে ধারাবাহিকভাবে মাসায়েল শিখা যায় এমন ভিডিও সিরিজ আছে কিনা জানা নেই।
(ঘ) বাধা দূর করে রুকইয়াহ শুরু করাঃ সরাসরি করতে না পারলেও সেলফ রুকইয়াহ চালিয়ে যাওয়া উচিত। এতে করে সমস্যা বাড়বে না ইংশা আল্লাহ। আর ফরজ ও মাসনুন আমল। আমরা যদি গুনাহ ছেড়ে দেই তাহলে শয়তান ধীরে ধীরে আমদের উপর থেকে তার প্রভাব হারাবে।
যেই কাজগুলো বেশি উপকারি এবং ফজিলতপূর্ণ-
১. তাহাজ্জুদ- ও দুয়া আমাদের রূহানী শক্তি বৃদ্ধি করে।
২. দরূদ শরীফ পড়লে ১০ টা রহমত আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া যায়।
৩. তাওবাকারীর গুনাহ আল্লাহ মুছে দেন।
৪. দান-সদাকাহ
৫. উপকার করা
৬. আত্মীয়তার হক আদায় করা
সব অসুস্থতার প্রতিষেধক আল্লাহ দিয়েছেন, আল্লাহ তায়ালা চান তার বান্দারা তার কাছে ফরিয়াদ করুক। আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ খুশি হন। যে যত চায় আল্লাহ তায়ালা তার উপর তত খুশি হন। তাকে তত মর্যাদা দেন। আল্লাহর প্রিয় হতে পারলে আর কী চাই!